বর্তমানে হোয়াটসঅ্যাপ একটি বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় app। হোয়াটসঅ্যাপ আমরা প্রায় সকলেই ব্যবহার করে থাকি। ইনস্ট্যান্ট যোগাযোগ হোক কিংবা ভিডিও কলিং সব ক্ষেত্রেই আমরা হোয়াটসঅ্যাপ ইউজ করে থাকি। তবে হোয়াটসঅ্যাপ এর কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে যা আমাদের সকলকে মেনে চলতে হয়। আর আপনারা যদি এইসব নিয়ম-কানুন মেনে না চলেন তাহলে সমস্যায় পড়তে পারেন। এমন ধরণের কিছু কাজ আছে যেগুলো করার কারণে আপনাদের হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কি কি কারণে হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
অফিসিয়াল অ্যাপ ইউজ না করা
কোনো অফিসিয়াল Whatsapp ছাড়াও থার্ড পার্টি app এর মাধ্যমেও Whatsapp ইউজ করা যায়। জিবি Whatsapp বা Whatsapp প্লাস এই ধরণের কিছু app রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে Whatsapp অফিসিয়াল app ছাড়াই Whatsapp একাউন্ট ইউজ করা যায়। এমনটা শোনা গেছে যে আপনারা যদি এই ধরণের app গুলির মাধ্যমে Whatsapp ব্যবহার করেন তাহলে আপনাদের Whatsapp একাউন্ট বন্ধও হয়ে যেতে পারে। কর্তৃপক্ষরা অফিসিয়াল app ব্যবহার করে Whatsapp ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে। আপনারা যদি থার্ড পার্টি app এর মাধ্যমে Whatsapp ব্যবহার করেন আর সেই বিষয়টা যদি Whatsapp কর্তৃপক্ষ ডিটেক্ট করতে পারে তাহলে আগে আপনাকে ওয়ার্নিং দেওয়া হবে এবং তারপরে আপনার একাউন্টটি বন্ধও করে দিতে পারবে। তাই আপনার Whatsapp একাউন্ট ব্যান হওয়া থেকে বাচাঁনোর জন্য থার্ড পার্টি App ব্যবহার করা বন্ধ করে দিন।
ব্রডকাস্ট লিস্টের অপব্যাবহার করা
কোনো আনন্দের দিনে সাবাইকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য, অথবা কোনো উৎসব বা ইভেন্ট সম্পর্কে সকলকে জানানোর জন্য ব্রডকাস্ট লিস্ট ফিচারটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অনেক বেশি ম্যাসেজ পাঠানোর ফলে আপনার একাউন্টটি কোনো রকম নোটিশ ছাড়াই ব্যান হয়ে যেতে পারে। ব্রডকাস্ট লিস্ট ফিচারটির মেইন উদ্দেশ্য অসংখ্য মানুষকে একই ম্যাসেজ পাঠানো হলেও এই ফিচারটির অপব্যবহারের ফলে আপনার Whatsapp একাউন্টটি ব্যান হয়ে যেতে পারে।
একাধিক গ্রুপ বানানো
Whatsapp এর একটি অন্যতম ফিচার হলো গ্রুপ। কোনো কারণ ছাড়া একাধিক গ্রুপ বানিয়ে সেখানে অন্যদের অ্যাড করার ফলেও আপনার Whatsapp একাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে। তাই অযথা কোনো কারণ ছাড়া Whatsapp এ অনেক বেশি গ্রুপ বানাবেন না।
একই ম্যাসেজ বারবার পাঠানো
Whatsapp এ একই ম্যাসেজ সবাইকে বারবার পাঠাবেন না। এই বিষয়টি যদি Whatsapp কর্তৃপক্ষের নজরে আসে তাহলে কিন্তু খুব শীঘ্রই আপনার একাউন্টটি ব্যান হয়ে যেতে পারে। তাই কখনোই কোনো ম্যাসেজ কপি-পেস্ট করে সবার ইনবক্সে পাঠিয়ে তাদেরকে বিরক্ত করবেন না।
ব্লক
যদি অনেকজন ব্যাক্তি মিলে আপনাকে Whatsapp থেকে ব্লক করে দেয়, সেক্ষেত্রে তাদের অ্যাকশনের ফলে আপনার Whatsapp একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই আপনি একজন Whatsapp ইউজার হিসেবে Whatsapp এর যে সমস্ত নিয়ম-কানুন আছে সেগুলো মেনে চলুন যাতে আপনাকে কেউ ব্লক না করতে পারে।
থার্ড-পার্টি অ্যাপ থেকে অটো ম্যাসেজ পাঠানো
সম্প্রতি “অটোমেটিক ম্যাসেজ” ফিচারের কারণে অনেকের Whatsapp একাউন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছ। এমন অনেক থার্ড পার্টি App রয়েছে যেখানে অটোমেটিক ম্যাসেজ ও রিপ্লাই পাঠানো যায় সেগুলো ব্যবহারের কারণে আপনার Whatsapp একাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই আপনাদের পক্ষে এই ধরণের থার্ড পার্টি App ব্যবহার না করাই ভালো।। আপনারা চাইলে Whatsapp এর নিজস্ব App ব্যবহার করেই অটো রিপ্লাই পাঠাতে পারবেন।
অতিরিক্ত ব্যবহার করা
ভয় পাওয়ার কোনো কিছুই নেই, আপনাদের প্রয়োজনে আপনারা Whatsapp ব্যবহার করতেই পারেন তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কিছু অল্প সময়ের এর মধ্যে যদি আপনার বিরুদ্ধে অনেক অ্যাকশন আসে তাহলে সেটাকে অপব্যাবহার বলে মনে করে Whatsapp , যার ফলে প্রথমে আপনাকে একটি ওয়ার্নিং দেওয়া হবে এবং পরে আপনার একাউন্টটি ব্যান করে দিতে পারে। সম্প্রতি কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে একাউন্ট ব্যান করে দেওয়ার মতো অ্যাকশন নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু শোনা যাচ্ছে যে থার্ড পার্টি app ব্যবহার করে এই ধরণের কাজ করা যেতে পারে। তাই আপনারা যদি আপনাদের Whatsapp একাউন্টটি সুরক্ষিত রাখতে চান তাহলে কোনো ধরণের থার্ড পার্টি app ব্যবহার করবেন না।
সন্দেহজনক অ্যাকশন
প্রায় অধিকাংশ মানুষই Whatsapp ইউজ করে। তবে প্রতিটি একাউন্টে Whatsapp এলগরিদম ব্যবহার করে নজর রাখা হচ্ছে। আপনার Whatsapp একাউন্ট থেকে যদি কোনো রকমের সন্দেহজনক কাজ করা হয়েছে বলে Whatsapp ধারণা করে, তাহলে আপনার Whatsapp একাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
একাধিকবার ব্লক হওয়া
ইতিমধ্যে কোনো রকম ভুলের কারণে যদি আপনার Whatsapp একাউন্ট সাময়িক ভাবে ব্লক করা হয়ে থাকে তবে ভবিষ্যতেও কোনো রকমের ভুলের কারণে আপনার একাউন্টটি ব্লক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই আপনার Whatsapp একাউন্টটি সুরক্ষিত রাখার জন্য উপরের উল্লিখিত বিষয় গুলি মাথায় রাখুন এবং আপনার Whatsapp একাউন্টটি ব্যান হওয়া থেকে রক্ষা করুন।
FAQ.
প্রশ্ন : হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট কোনো বন্ধ করে দেওয়া হয় ?
উত্তর : নিরাপত্তা বজায় রাখতে, ডেটা ধারণ সীমিত করতে এবং আমাদের ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে, WhatsApp অ্যাকাউন্টগুলি সাধারণত 120 দিনের নিষ্ক্রিয়তার পরে মুছে ফেলা হয়।
প্রশ্ন : একটি হোয়াটসঅ্যাপ কতক্ষণ সময় পর্যন্ত ব্যান করা হয়ে থাকে ?
উত্তর : একটি হোয়াটসঅ্যাপ সাধারণত ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যান করা হতে পারে, অথবা কোনো গুরুতর ক্ষেত্রে এগুলি বেশ কয়েক দিন পর্যন্ত ব্যান হতে পারে৷
প্রশ্ন : হোয়াটসঅ্যাপ এ অনেক বেশি গ্ৰুপ বানানোর ফলে কী অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে ?
উত্তর : হ্যাঁ হোয়াটসঅ্যাপ এ অনেক বেশি গ্ৰুপ বানানোর ফলে আপনার অ্যাকাউন্ট ব্যান হয়ে যেতে পারে। তাই অযথা অনেক বেশি গ্ৰুপ বানাবেন না।
প্রশ্ন : আমি কীভাবে আমার ব্যান হয়ে যাওয়া হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি ফিরে পেতে পারি ?
উত্তর : ১। আপনি যদি মনে করেন যে আপনার অ্যাকাউন্টটি ভুলবশত ব্যান করা হয়েছে, তাহলে আপনি হোয়াটসঅ্যাপ সাপোর্ট এ গিয়ে Settings থেকে Help এ গিয়ে Contact Us এ লিখতে পারেন।
২। এছাড়াও আপনি WhatsApp Messenger Support ব্যবহার করতে পারেন, এবং এই বিষয়ে সাহায্যের জন্য জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
প্রশ্ন : হোয়াটসঅ্যাপ প্রথম কবে শুরু হয়েছিল ?
উত্তর : হোয়াটসঅ্যাপ 2009 সালের আগস্ট মাসে প্রথম শুরু হয়েছিল।
আপনার জন্য আরো
1.হোয়াটসঅ্যাপে আসতে চলেছে এক বিশেষ সুবিধা যা আমাদের টাকার বিনিময়ে কিনতে হবে।
2.হোয়াটসঅ্যাপ এ নম্বর সেভ না করে কল ও ম্যাসেজ করার উপায়
3.হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ডিলিট হওয়া ম্যাসেজ সহজে কীভাবে পড়বেন ?
4.আপনার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টটি হ্যাক হওয়ার থেকে কীভাবে বাঁচাবেন ?