বর্তমানে Smartphone ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়ায় মুশকিল। এখন প্রায় সবার বাড়িতেই একটি হলেও স্মার্টফোন আছে। স্মার্টফোন আমাদের বহুক্ষেত্রে কাজে লাগে, এছাড়া স্মার্টফোন আমাদের বিভিন্ন রকমের কাজে সহায়তা করে। বর্তমানে মার্কেটে অনেক নতুন নতুন স্মার্টফোন রয়েছে। এরমধ্যে কিছু ভালোও রয়েছে আবার কিছু খারাপ ফোনও রয়েছে।
স্মার্টফোনের বাজেট আপনার চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারিত করা হয়। বাজেট আপনার যেমন থাকবে আপনি তেমন ফোন পাবেন। তাই স্মার্টফোন কেনার আগে কিছু জরুরি বিষয় সম্পর্কে জেনে নেওয়া দরকার। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
স্ক্রিন ও ডিসপ্লে
স্মার্টফোন কেনার আগে ফোনের স্ক্রিন এবং ডিসপ্লে অবশ্যই ভালো করে দেখে নেওয়া দরকার। তারপর দেখবেন ফোনের ডিসপ্লে সাইজ কত আছে। কারণ অনেকেরই ছোট ডিসপ্লে খুব একটা পছন্দ হয় না।আবার অনেকের বড় ডিসপ্লে পছন্দ হয়। এছাড়া ফোনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি কেমন ? HD, নাকি Full HD, HD+, এমোলেড, ওলেড, রেটিনা সেটাও দেখে নেওয়া দরকার। যদি আপনি কম কোয়ালিটির ডিসপ্লে নেন তাহলে ভিডিও এবং ইমেজ দেখতে অতটা ভালো লাগবে না। তাই Full HD ডিসপ্লে ফোন নেওয়াই ভালো। এছাড়াও আপনার ফোনের ডিসপ্লে LCD (এলসিডি) নাকি AMOLED (এমোলেড) সেটাও দেখে নেওয়া দরকার। কারণ এমোলেড ডিসপ্লে কোয়ালিটি অনেক বেশি ভালো এলসিডি ডিসপ্লের তুলনায়।
মোবাইলের RAM
সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ফোনের র্যাম। যদি আপনি বেশি মাল্টিটাস্কিং করেন, সেক্ষেত্রে অন্তত ৪ জিবি র্যাম এর ফোন নিন। আর গেম খেলার জন্য অন্তত ৬ – ৮ জিবি র্যাম এর ফোন নিন। যদি আপনি সাধারণ ইউজার হন তাহলে ৩ জিবি র্যাম থাকলেই যথেষ্ট।
ব্যাটারি ব্যাকআপ
আপনার ফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ কেমন হবে সেটা অবশ্যই জেনে নেওয়া দরকার। বর্তমানে 5000mah ব্যাটারি বেশ প্রচলিত রয়েছে। এর থেকে বেশি ব্যাটারি ব্যাকআপ এর ফোনও পেয়ে যাবেন আপনি আপনার বাজেট অনুযায়ী। যদি কোনো কারণে আপনার ব্যাটারি ব্যাকআপ খারাপ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আপনার ফোনের চার্জ বেশিক্ষন থাকবে না।
ইন্টার্নাল স্টোর বা মোবাইলের মেমোরি
আপনি আপনার ফোনে বেশি ফাইল সেভ রাখতে পারবেন যদি আপনার ফোন মেমোরি বেশি হয়। অন্তত ৬৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোর আপনার ফোনে থাকলে ভালো হয়। কিন্তু আপনি যদি কোনো ভারী কাজ করেন যেমন -হেভি গেমিং, ফটো এডিটিং, ভিডিও এডিটিং তাহলে আপনার মেমোরির পরিমান আরও বাড়াতে হবে। এর ফলে আপনি যে সমস্ত কাজ গুলি করছেন সেগুলি আরও ভালো করে করতে পারবেন।
মোবাইলের ক্যামেরা
আপনি যদি সেলফি প্রেমিক হন অথবা আপনার যদি ছবি তুলতে খুব বেশি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনাকে ফোনের ক্যামেরা কোয়ালিটি খুব ভালো দেখে নিতে হবে। ফোনের ক্যামেরার মেগাপিক্সেল এর থেকেও ক্যামেরার কোয়ালিটি কেমন সেটা অবশ্যই দেখে নেওয়া দরকার।
মোবাইলের প্রসেসর (CPU)
একটি ফোনের প্রসেসর এর উপরে নির্ভর করে সেই ফোনের পারফরম্যান্স। তাই সব সময় চেষ্টা করবেন ভালো কোয়ালিটির ফোন নেওয়ার। বর্তমানে মিডিয়াটেক ও স্ন্যাপড্রাগন এর প্রসেসর গুলো খুব জনপ্রিয়। এই প্রসেসরটি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার বাজেট অনুযায়ী।
মোবাইলের GPU
চেষ্টা করবেন সব সময় ভালো কোয়ালিটির GPU ব্যবহার করার। বর্তমানে ম্যালি জি৭৮,৭৭,৭৬, অ্যাড্রিনো ৬৬০,৬৫০,৬৪০ GPU গুলো বেশ ভালো কোয়ালিটির।
মোবাইলের ব্র্যান্ড
একটি স্মার্টফোন কোন কোম্পানি থেকে তৈরী হয়েছে সেটা জানা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি একটি ভালো কোম্পানির স্মার্টফোন কেনেন, সেক্ষেত্রে সেই ফোনের কোয়ালিটি ভালো হবে। কারণ কোনো ব্র্যান্ডেড কোম্পানি কখনোই চাইবে না যে তাদের প্রোডাক্ট কোয়ালিটি খারাপ হোক। অপরদিকে আপনি যদি কোনো সাধারণ কোম্পানির ফোন কেনেন সেক্ষেত্রে সেটা খারাপও হতে পারে। আবার ফোনের কোয়ালিটিও খুব একটা ভালো নাও হতে পারে।
মোবাইলের সাইজ ও ডিজাইন
একটি স্মার্টফোনের ডিজাইন যদি খারাপ হয় তাহলে সেটা দেখতেও অতটা সুন্দর লাগে না। বর্তমানে আমাদের দেশে কম মূল্যে অনেক নতুন নতুন প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ডিজাইনের স্মার্টফোন পাওয়া যায়। তাই ফোনের ডিজাইন যাতে ভালো হয় সেদিকে বেশি নজর দেবেন। ফোনের সাইজের বিষয়ে আগেই জানানো হয়েছে। আবার জানাচ্ছি, অনেকের ছোট ফোন ভালো লাগে, অনেকের আবার বড় ফোন ভালো লাগে। তাই ফোনের সাইজের ব্যাপারটা যার যার পছন্দের উপর নির্ভর করে।
মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম
আপনারা সব সময় চেষ্টা করবেন সবচেয়ে আপডেটিং অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোন নেওয়ার। আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড পছন্দ করেন তাহলে অ্যান্ড্রয়েড ১২ নিতে পারেন নতুন আপডেটেড ফিচার গুলি আনন্দ উপভোগ করার জন্য। আর যদি আপনি আইফোনের ইউজার হন তাহলে ios 14 অপারেটিং সিস্টেম নিতে পারেন। তবে আপনি ভালো ব্র্যান্ডের ফোনের ক্ষেত্রে নতুন অ্যান্ড্রয়েড এর আপডেট পেয়ে যাবেন।
বাজেট
আপনাদের উপরের যত গুলো অপশনের বিষয়ে জানালাম এগুলোর পুরোপুরি অপশনই আপনার বাজেটের উপর নির্ভর করবে। আপনার বাজেট যদি বেশি হয় তাহলে আপনি ভালো কোয়ালিটির ফোন নিতে পারবেন।ফোন কেনার আগে অবশ্যই অনলাইনে দেখে নেবেন সেই ফোনের দাম কত আছে। কিন্তু হ্যাঁ মনে রাখবেন, যদি কেও আপনাকে কম মূল্যের মধ্যে বেশি কিছু দেয় যেটা দেওয়ার কথা নয় তাহলে বুঝে নেবেন যে সেই জিনিসের মধ্যে কোনো গোলমাল রয়েছে।
আশা করি আপনারা সবাই এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন যে নতুন স্মার্টফোন কেনার আগে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। আপনার কেনা প্রথম স্মার্টফোন কোনটি সেটি অবশ্যই আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন।
FAQ
প্রশ্ন : একটি স্মার্টফোন কত দিন পর্যন্ত ভালোভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে ?
উত্তর : একটি স্মার্টফোন কমপক্ষে ২-৩ বছর পর্যন্ত ভালোভাবে ব্যবহার করা যায়।
প্রশ্ন : অ্যান্ড্রয়েড এর লেটেস্ট ভার্সন কোনটি ?
উত্তর : Android OS এর লেটেস্ট ভার্সন হল 12, যা 2021 সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রশ্ন : বর্তমানে কোন ব্যাটারিটি সব থেকে বেশি প্রচলিত ?
উত্তর : বর্তমানে 5000mah এর ব্যাটারি সব থেকে বেশি প্রচলিত।
প্রশ্ন : ফোনের ইন্টার্নাল স্টোরেজ কত জিবি হলে ভালো হয় ?
উত্তর : 64 জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ আপনাদের ফোনের পক্ষে ভালো হবে।
প্রশ্ন : ফোনের সব থেকে ভালো প্রসেসর কোনটি ?
উত্তর : বর্তমানে মিডিয়াটেক ও স্ন্যাপড্রাগন এর প্রসেসর গুলো খুব বেশি জনপ্রিয়।
আপনার জন্য আরো
1.IMEI নম্বর কি? মোবাইলের IMEI নম্বর দিয়ে কি কি করা যায়?
2.স্মার্ট ফোন কেন বেশি গরম হয়ে যায় ? এই সমস্যার সমাধান জেনে নিন