আপনার স্মার্টফোনের জন্য একটি সঠিক চার্জার কিভাবে কিনবেন|How to buy a perfect charger for your smartphone in Bengali 2022

আপনার স্মার্টফোনের সঙ্গে যে চার্জারটি দেয়া হয় সেই অরিজিনাল চার্জারটি সর্বদা ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন স্মার্টফোনের সঙ্গে বক্সে কোন রকম চার্জার দেয়া হচ্ছে না অথবা যদি আপনার চার্জারটি কোন কারণে নষ্ট হয়ে যায় বা খারাপ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে একটি নতুন চার্জার কেনার প্রয়োজন হয়। তবে অনেকেই চার্জার কেনার সঠিক পদ্ধতি জানেন না। ভুল চার্জার কিনলে আপনার ফোনের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে এবং চার্জের উপরও প্রভাব পড়তে পারে। এই পোস্টটিতে আপনারা চার্জার কেনার সময় কোন কোন বিষয়গুলি সম্পর্কে লক্ষ্য রাখতে হবে সেটা জানবেন।

চার্জিং পোর্ট

সর্বপ্রথম যে জিনিসটি খেয়াল রাখা উচিত সেটি হল চার্জিং পোর্ট আপনি যে স্মার্টফোনটি ব্যবহার করছেন সেটিতে কোন চার্জিং পোর্ট ব্যবহার করা হয়েছে সেই পোর্টের চার্জারটি আপনাকে কিনতে হবে। বর্তমানে স্মার্টফোনগুলোতে চার্জিং পোর্ট হিসেবে type-c পোর্ট ব্যবহার করা হয়। আগে স্মার্টফোনগুলোতে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট ব্যবহার করা হতো। আবার আপনি যদি আইফোন ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে সেখানে চার্জিং পোর্ট হিসাবে লাইটনিং পোর্ট ব্যবহার করা হয়।

সেজন্যই আপনি যখনই আপনার চার্জার কিনতে যাবেন আপনার স্মার্টফোনটি অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে যাবে তাতে ভুল চার্জার কেনার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে। আপনার কাছে যদি ফোনটি না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে গিয়ে সেই ফোনটিতে কোন চার্জিং পোর্ট রয়েছে সেটি দেখে নিন তারপর চার্জারটি কিনুন।

পাওয়ার আউটপুট

পাওয়ার আউটপুট ও একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। পাওয়ার আউটপুট সম্পর্কে জানবার জন্য দুটি বিষয় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হল ভোল্টেজ এবং এম্পিয়ার। নিচে এগুলি সম্পর্কে বিস্তারে আলোচনা করা হল

অ্যাম্পিয়ার(W)

একটি চার্জারের এম্পিয়ার যত বেশি হয় চার্জিং স্পিড তত বেশি হয়। তবেই স্মার্টফোনগুলোতে তার চার্জিং ক্যাপাসিটি অনুযায়ী সেগুলিকে লিমিট করা থাকে যাতে ফোনের কোন ক্ষতি না হয়। সেই জন্য আপনার ফোনের চার্জিং ক্যাপাসিটি যদি 30 ওয়াট হয় সে ক্ষেত্রে আপনি 60 ওয়াটের কোন চার্জার ব্যবহার করলেও আপনি কোন রকম অ্যাডভানন্টেজ পাবেন না অর্থাৎ চার্জিং স্পিড আপনার বারবে না।

স্মার্টফোনের চার্জারের দ্রুততা বা গতি পরিমাপের একক হিসাবে ওয়াট(W) ব্যবহার করা হয়। একটি চার্জারের পাওয়ার আউটপুট জানতে হলে সেই চার্জারের অ্যাম্পিয়ার ও ভোল্টেজকে গুন করতে হবে। এই ওয়াট সংখ্যা যত বেশি হবে চার্জারটি দ্রুত ডিভাইসটিকে চার্জ দিতে সক্ষম হবে। বর্তমানে ১৫০ ওয়াটের চার্জারও মার্কেটে বিদ্যমান যা আপনার স্মার্টফোনটিকে 30 মিনিটের কম সময়ে ফুল চার্জ করে দিতে সক্ষম।

মনে করুন একটি চার্জারের ভোল্টেজ 10V ও অ্যাম্পিয়ার 2A, তাহলে ওই চার্জারের পাওয়ার আউটপুট হবে 20W ওয়াট। বর্তমানে মার্কেটে 18 ওয়াট থেকে শুরু করে 150 ওয়াটের চার্জার স্মার্টফোনের  সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। তবে আপনার স্মার্টফোনটি কত ওয়াটের চার্জার পর্যন্ত সাপোর্ট করে সেটা অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন।

ভোল্টেজ(V)

আপনার চার্জারটির স্পিড অনেকটা আপনার চার্জারের ভোল্টেজ এর উপর নির্ভরশীল। একটি ভালো চার্জার প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সেটি আপনার ফোনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্দিষ্ট ভোল্টেজ প্রদান করবে। ৫ ভোল্টকে অনেকদিন ধরেই একটি নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছিল কিন্তু বর্তমানে টেকনোলজির অগ্রগতির ফলে আমরা নয় ভোটের চার্জারও দেখতে পাই যা আপনার স্মার্টফোনটিকে অনেক দ্রুত চার্জ দিতে সক্ষম। তবে আপনার স্মার্টফোনটি কত ভোল্টের চার্জ নিতে সক্ষম সেটি আপনি অরজিনাল চার্জারের গায়ে অথবা ইউজার ম্যানুয়াল এ দেখে নিতে পারেন এছাড়া আপনি যদি ইউজার ম্যানুয়াল হারিয়ে ফেলেন সেক্ষেত্রে অনলাইনেও সার্চ করে দেখতে পারেন।

ফাস্ট চার্জিং প্রটোকল

বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ছুটে চলেছেন তাদের প্রত্যেক জীবনের লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করবার জন্য সেই কারণেই সময় তাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তাদের এই সমস্যাকে সমাধান এর উদ্দেশ্যেই স্মার্টফোনগুলোর চার্জিং স্পিডও আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে অনেক স্মার্টফোনগুলোতে ফাস্ট চার্জিং প্রটোকল ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন রেডমি, oppo,vivo motorola,samsung ইত্যাদি প্রায় সমস্ত কোম্পানি ফাস্ট চার্জিং প্রটোকল ব্যবহার করছে তাদের নতুন স্মার্টফোনগুলিতে।

আপনি যদি আইফোন ৮ অথবা তার পরে রিলিজ হওয়া স্মার্টফোনগুলি ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে ফাস্ট চার্জিং প্রটোকলের ব্যবহার দেখা যায়। এসমস্ত ফাস্ট চার্জার গুলো আপনার আইফোন টিকে 30 মিনিটে 50 পার্সেন্ট চার্জ দিতে সক্ষম।

মাল্টিপল ডিভাইস চার্জিং

অনেকেই তাদের মাল্টিপল ডিভাইসগুলি কে একসঙ্গে চার্জ করার জন্য মাল্টি চার্জার ব্যবহার করেন। কিন্তু এই ধরনের চার্জার ব্যবহার না করাই আমার মতে শ্রেয় আপনার আলাদা আলাদা ডিভাইসের জন্য আলাদা অরিজিনাল চার্জার ব্যবহার করায় আপনার ডিভাইস এর পক্ষে ভালো।

ব্র্যান্ড

চার্জার কিনবার পূর্বে অবশ্যই চার্জারের ব্র্যান্ডি দেখে নেবেন। আপনি যে ব্র্যান্ডের কোনটি ব্যবহার করছেন যদি সেই ব্রান্ডের চার্জার হয় তাহলে তো খুবই ভালো। যদি কোন কারণে সেম ব্রান্ডের চার্জার না পান সেক্ষেত্রে আপনি থার্ড পার্টি চারজারও ব্যবহার করতে পারেন তবে সেই চার্জার এর ব্রান্ড টি যেন ভালো হয়।

আপনি যদি কোন আইফোন ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে অবশ্যই apple স্টোরে গিয়ে ওরিজিনাল চার্জার কিনবেন যা আপনার ফোনের ব্যাটারি লাইফ ও লং জিবিটি অনেক অংশে বাড়িয়ে দেবে।

উপসংহার

আপনার যদি চার্জার কিনতে হয় সর্বপ্রথম আপনি যে ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন ব্যবহার করেন সেই ব্র্যান্ডের স্টোর থেকে স্মার্টফোনটি নিয়ে গিয়ে অরিজিনাল চার্জার কিনুন আপনার স্মার্টফোনটি পক্ষে সবচেয়ে ভালো হবে। চার্জার নিয়ে আপনার কোন অভিজ্ঞতা থাকলে অবশ্যই আমাদের সাথে শেয়ার করুন এবং চার্জার সংক্রান্ত কোনো রকম প্রশ্ন থাকলে অবশ্য আমাদের কোন বক্সে কমেন্ট করে জানান।

FAQ.

প্রশ্ন:স্মার্টফোনে কত রকমের চার্জিং কেবিল রয়েছে?

উত্তর:পাঁচ প্রকারের চার্জিং কেবিল রয়েছে
মাইক্রো USB কেবিল
Type-A চার্জার কেবিল 
Type-B চার্জার কেবিল
Type-C চার্জার কেবিল
Apple’s লাইটনিং চার্জার

প্রশ্ন:রিভার্স চার্জ কি?

উত্তর:
রিভার্স চার্জিং  হলো এক ধরনের ফিচার যার সাহায্যে আপনি আপনার ফোন থেকে অন্য  কোন ফোনে চার্জ দিতে পারবেন।

প্রশ্ন:স্মার্টফোনের জন্য সবথেকে ভালো চার্জার কোনটি?

উত্তর:আপনার স্মার্টফোনের সঙ্গে বক্সে যে অরজিনাল চার্জারটি থাকে সেটি আপনার ফোনের জন্য সবথেকে ভালো চার্জার।

প্রশ্ন:স্মার্টফোনের সর্বোচ্চ কত ওয়াটের চার্জার মার্কেটে বর্তমান রয়েছে ?

উত্তর:Oppo SuperVOOC চার্জার 240W

প্রশ্ন:চার্জার এর গতি পরিমাপের একক কি?

উত্তর:চার্জারের গতি পরিমাপের একক ওয়াট (w)

আপনার জন্য আরো

1.চার্জ দেওয়াকালীন কি ফোন ব্যবহার করা উচিত ? তথ্য সহ সঠিক বিষয়টি জেনে নিন

2.ফোনের ব্যাটারিতে বিস্ফোরণ কেন হয় ? এই দুর্ঘটনা থেকে কীভাবে নিজেকে বাঁচাবেন ?

3.মোবাইল হ্যাং করলে তা কিভাবে ঠিক করবেন

4.খারাপ মেমোরি কার্ড ঠিক করার উপায়

Leave a Comment