কম্পিউটারকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে হবে। কম্পিউটার হলো একটি আধুনিক প্রযুক্তি যা আমাদের নানা ধরণের কাজে ব্যবহৃত হয়। আমাদের ব্যাক্তিগত তথ্য ও ডেটা গুলো ভাইরাস এবং ম্যালওয়ার যুক্ত ক্ষতিকারক প্রোগ্রামগুলো চুরি করে নিতে পারে এবং যেকোনো ধরণের ক্ষতিও করতে পারে। এই পোস্টটিতে আমরা জানাবো যে কিভাবে কম্পিউটারকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে।
চলুন তাহলে কম্পিউটারকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখার উপায় গুলি জেনে নেওয়া যাক।
এন্টিভাইরাস ইউস করা
আপনারা অনলাইনে নানা ধরণের এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম পেয়ে যাবেন যেগুলির দামের সাথে সাথে তার নিরাপত্তার একটা যোগসূত্র রয়েছে। যে সব এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামের মূল্য যত বেশি হবে সে সমস্ত এন্টিভাইরাস কম্পিউটারকে বেশি সুরক্ষিত রাখবে। এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম কম্পিউটার ডিভাইসে ইন্সটল করা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। আপনারা মনে করলে অনেক ধরণের এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। একটা সময় আমরা মনে করতাম যে কম্পিউটারে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ইন্টারনেট ইউস না করবো ততক্ষন পর্যন্ত কোনো রকমের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে লাগবে না। কিন্তু এই বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ যখন আমরা ইউএসবি ক্যাবল এর মাধ্যমে Data আদান প্রদান করি ঠিক তখনই ভাইরাসগুলো আমাদের কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারবে। আমাদের এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে যে একটা কম্পিউটার ডিভাইসকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে খুব বেশি অর্থ বা সময়ের প্রয়োজন হয় না। এই জন্য যে সমস্ত ব্যাক্তিরা কম্পিউটার ইউস করেন তাদের প্রত্যেকের উচিত যে তাদের কম্পিউটার ডিভাইসে একটি ভালো এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ইন্সটল করে রাখা।
রেগুলার সফটওয়্যার আপডেট করা
আপনাদের উচিত কম্পিউটার প্রোগ্রামের সফটওয়্যার গুলো রেগুলার আপডেট করে রাখা। এতে কম্পিউটারের সফটওয়্যার গুলোর কার্যক্ষমতা আরও বেশি ভালো হবে। সফটওয়্যার গুলো আপডেট করার ক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্ব দেয়াও হয় তাদের সুরক্ষা ব্যাবস্থার ওপর। যাতে কোনো রকমের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম আমাদের অপারেটিং সিস্টেমে এন্টার না করতে পারে। এছাড়াও আমাদের প্রোগ্রাম গুলোকে হ্যাকাররা যাতে হ্যাক না করতে পারে সেটারও ব্যবস্থা করা হয়। তাই যখন কোনো ধরণের অপারেটিং সিস্টেমে আপডেটের নোটিফিকেশন আসবে ঠিক সেই সময়ই আমাদের প্রত্যেকের উচিত অপারেটিং সিস্টেম গুলো আপডেট করে নেওয়া। আর অবশ্যই অপারেটিং সিস্টেম গুলো আপডেট করার আগে প্রয়োজনীয় সতর্কতা গুলো ভালো করে পড়ে জেনে নেবেন।
Data Back Up করে রাখা
কখনো কখনো কম্পিউটারে ভাইরাস আক্রমণ করলে তখন আমরা ভাইরাস গুলোকে ডিলিট করতে পারি না।ফলে সেই সময় আমাদের কিছু কিছু ফাইল ডিলিট করে দিতে হয়। এইজন্য আমাদের উচিত আগে থেকে সেই সমস্ত ফাইল গুলোর ব্যাকআপ করে রাখা। কারণ ক্ষতিকারক কম্পিউটার ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারকে আক্রমণ করে আমাদের ব্যাক্তিগত ফাইল গুলোকে করাপ্টেড বা যে কোনো রকমের মেমোরিতে ফরমেট করে দিতে পারে।
যদি আপনারা কম্পিউটারের ডেটা গুলোকে ব্যাকআপ করে না রাখেন তাহলে তা আর পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর যদি আমরা আগে থেকেই কম্পিউটারের ব্যাক্তিগত ডেটা গুলো ব্যাকআপ করে রাখি তাহলে তা আমরা পরেরবার খুঁজে পেতে পারবো। অথবা আমাদের আর কিছুই করার থাকবে না। এর ফলে আমাদের খরচ অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই এই রকম দুর্ঘটনা থেকে বাচার জন্য আমাদের উচিত যে আমাদের ব্যাক্তিগত ও প্রয়োজনীয় ফাইল গুলোকে ব্যাকআপ করে রাখা। এছাড়াও চাইলে আমরা কয়েক ধরণের ব্যাকআপ করে রাখতে পারি। যেমন ধরুন – অনলাইনে, অফলাইনে বা ক্লাউড স্টোরেজ এর মাধ্যমে। চাইলে আপনারা এগুলো ফ্রিতেও করতে পারবেন।
একটি কঠিনতম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা
পাসওয়ার্ড হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস যা আমাদের অ্যাকাউন্টগুলো অন্যদের ব্যবহার করার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে। শুধুমাত্র আমরা যাদের অনুমোদন করবো তারাই আমাদের অ্যাকাউন্ট গুলো ইউস করতে পারবে। আর যদি কেউ একবার আমাদের অ্যাকাউন্ট গুলোতে প্রবেশ করার অধিকার পেয়ে যাই তাহলে আমাদের অ্যাকাউন্ট গুলোতে প্রয়োজনীয় ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম করাতে পারবে যা আমাদের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমকে অটোমেটিকভাবে আপডেট করাতে পারবে। আপনারা সব সময় চেষ্টা করবেন একটি কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার যেটা আপনাদের সম্পর্কিত হবে না। কারণ আমরা যদি সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি তা আমাদের চেনা পরিচিত ব্যাক্তিরা বা হ্যাকাররা অনুমান করে জেনে যেতে পারবে। আমরা আমাদের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমকে কিছুটা সুরক্ষিত রাখার জন্য লগইন সিস্টেম ব্যবহার করতে পারি।
অনলাইন থেকে সেভ করা ফাইল দেখা
যে সব ওয়েবসাইটে ক্ষতিকারক ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থাকে সেগুলো গোপন অবস্থায় থাকে। আমাদের অনুমতি ছাড়া হঠাৎ করে যদি কোনো কিছু ডাউনলোড শুরু হয়ে যায় তাহলে তৎক্ষণাৎ তা বন্ধ করে দেবেন। এইভাবেই ক্ষতিকারক ভাইরাস গুলো আমাদের কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে যায়। যেগুলো আমরা সচারচর খেয়াল করে থাকি না। এইসব অনাকাঙ্খিত বিষয় গুলো থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য আমরা একটি ভালো মানের ব্রাউজার যেমন ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করতে পারি। নাহলে আমাদের অজান্তেই এই ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ফাইল গুলো ডাউনলোড হয়ে যাবে। যেটা পরে আমাদের কম্পিউটার ডিভাইসের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অ্যাড ব্লক সফটওয়্যার ইউস করা
অনলাইনে প্রায়ই পপ-আপ বিজ্ঞাপন গুলি আমাদের অন্য কোনো সাইটে নিয়ে যেতে পারে এবং এর ফলে ক্ষতিকারক ভাইরাস গুলি ডাউনলোড হয়ে যেতে পারে। আপনি চাইলে এই সমস্যা গুলি খুব সহজেই এড়িয়ে যেতে পারবেন। এইজন্য আপনাকে একটি ভালো বিশ্বস্ত মানের Ad – Blocker সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে। যেটি আপনাকে আর অনলাইনে পপ-আপ বিজ্ঞাপন গুলি দেখাবেনা। আপনারা গুগলে ফ্রি ও পেইড এড ব্লকারের অনেক App পেয়ে যাবেন। আপনি যদি এই ধরণের Ad – Blocker সার্ভিস ব্যবহার করেন তাহলে আপনি যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে আপনাকে বাধা দেবে। এরসাথে আপনাকে আরও বেশি সতর্কতা বজায় রেখে কোনো কিছু ব্রাউজ করতে হবে।
ভাইরাস স্ক্যানার ইউস করা
এন্টিভাইরাস অথবা অ্যাড ব্লকার ইউস করার পরেও আমাদের কম্পিউটারে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ইন্সটল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই জন্যই ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম গুলির হাত থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য আমাদের রেগুলার একটি ভাইরাস স্ক্যানার অ্যাপ ব্যবহার করা প্রয়োজন। যখন আমরা কোনো কিছু ব্যাকআপ নেবো তখন আমাদের উচিত সমস্ত ফাইল গুলিকে ভাইরাস স্ক্যানার এর মাধ্যমে স্ক্যান করে নেওয়া। যাতে আমরা ভাইরাসের হাত থেকে কিছুটা হলেও সুরক্ষিত থাকবো।
সন্দেহজনক লিংক এড়িয়ে যাওয়া
কোনো রকম অজানা উৎস থেকে আসা লিংক আপনার সমস্যার কারণ হতে পারে। ফিশিং ইমেইল পাঠানো হলো একটি সাধারণ কৌশল যা আমাদের কম্পিউটারে পাঠিয়ে কোনো রকম ক্ষতিকারক সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইন্সটল করিয়ে আমাদের সমস্ত তথ্য বা ফাইল গুলিকে চুরি করতে পারে। তাই এই ধরণের হুমকি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা যখন কোনো অজানা লিংকে ট্যাব করবো তখন আমাদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কম্পিউটারকে ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখা এমন কিছু কঠিন ব্যাপার না। আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত ওয়েব বা ব্রাউজ করার সময় কোনো রকম ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন থাকবো ততক্ষন পর্যন্ত আমরা সুরক্ষিত থাকবো।
সুতরাং কম্পিউটারকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে আপনাদের অনেক বেশি সতর্কতা বজায় রেখে কোনো কিছু ব্রাউজ করতে হবে। Data আদান-প্রদান করার ক্ষেত্রেও আপনাদের সচেতন থাকতে হবে। তাহলে আপনারা যদি নিজেদের কম্পিউটারকে ভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে চান এই বিষয়গুলি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
আপনার জন্য আরো
1.কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর 16 টি সুপার হট টিপস
2.আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত কিনা কিভাবে জানবেন ?
3.উইন্ডোস কম্পিউটারের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সেটিংগুলো চালু করুন
4.কম্পিউটারের লগইন পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন জানুন লক খোলার উপায়