Precautions to use when using a credit card online in Bengali 2022|অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে যেসব সতর্কতা গুলি অবলম্বন করা প্রয়োজন

অনলাইন লেনদের জন্য ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে আমাদের দেশে। আর এরই সাথে থাকছে কিছু নিরাপত্তা সম্পর্কিত ঝুঁকি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইন শপিং করলে ভয় পাওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। আপনারা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে অতি সহজেই ক্রেডিট কার্ড ব্যাবহার করে অনলাইন শপিং করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনারা নিজেদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। চলুন তাহলে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে শপিং করার সময় যে ধরণের সাবধানতা গুলি  অবলম্বন করা উচিত সেইসব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কার্ডের তথ্যগুলি সেভ না করা

অনেক সময় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে অনলাইন শপিং করার জন্য কার্ড ব্যবহার করার পর ওই ওয়েবসাইট এ কার্ডের  তথ্য সেভ করার একটি অপসন দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এই অপশনটি ব্যবহার না করাই উচিত। আপনারা যদি শপিং ওয়েবসাইটগুলিতে কার্ডের তথ্য সেভ করে  রাখেন তাহলে আপনার কার্ডের সেই তথ্যের মাধ্যমে হ্যাকাররা আপনার একাউন্ট অ্যাকসেস পেয়ে যেতে পারে এর ফলে হ্যাকাররা আপনার কার্ডের টাকা খরচ করে ফেলতে পারবে। যদিও প্রত্যেকবার কেনাকাটার সময় বার বার তথ্য দেওয়া বিরক্তিকর মনে হয় তাও কার্ডের নিরাপত্তার জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আবার যেসব ওয়েবসাইটে আপনারা অটোমেটিক প্রতিনিয়ত বিল জমা দিতে চান সেসব ওয়েবসাইটে কার্ডের তথ্য সেভ না করে কোনো উপায় থাকে না। ধরুন যেমন গুগল অ্যাড এবং ফেসবুক।

বিশ্বস্ত এবং পরিচিত ওয়েবসাইটে কেনাকাটা করা 

আপনারা কোনো প্রোডাক্ট কষ্ট করে না খুঁজে কোনো বিশস্ত অথবা পরিচিত ওয়েবসাইট গুলোতে আপনার পছন্দের ওই প্রোডাক্ট গুলি খুঁজতে পারেন। আসল ওয়েবসাইটের মতো প্রায় একই নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ফেক ওয়েবসাইট আপনাদের সাথে প্রতারণা করতে পারে।

যেমন ধরুন – daraz.com.bd এর পরিবর্তে daraz.xzz ডোমেইন ব্যবহার করা হতে পারে। অফিসিয়াল অ্যাপ হলো যেকোনো অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটে ব্যবহার করার সেরা এবং নিরাপদ উপায়। এতে আপনি যদি কোনো ভুল ঠিকানায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন তাহলেও প্রতারণার কোনো রকম ভয় থাকবে না। তবে অবশ্যই অ্যাপ ডাউনলোড করার আগে ইনস্টল ও রিভিউ সংখ্যা দেখে নেবেন। কারণ বিভিন্ন ফেক অ্যাপও রয়েছে অ্যাপ মার্কেটগুলোতে।

এন্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ইন্সটল

এন্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার এবং ফায়ারওয়াল ব্যবহার করা অতি আবশ্যক আপনার সকল প্রকার ডেক্সটপ, ল্যাপটপ ও অন্যান্য যেকোনো ব্রাউজিং ডিভাইসে। এই এন্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার আপনার ডিভাইসকে ভাইরাস এবং বিভিন্ন ধরণের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। অটো-আপডেট অপশনটি অন করে রাখুন এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যে এন্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার যাতে নানা রকম ভাইরাস ও থ্রেটস এর বিরুদ্ধে তৈরী থাকতে পারে।

পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা

ফ্রি ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে কখনই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে লেনদেন করবেন না। ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করা খুব একটা নিরাপদ হয় না। যার ফলে স্পাইওয়্যার এবং ম্যালওয়্যার এর মতো ফিচার গুলির বিরুদ্ধে কোনো প্রটেকশান থাকে এই ধরণের নেটওয়ার্কে। এই সব কারণে ফ্রি ওয়াইফাই এর মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটা করলে ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও বিভিন্ন তথ্য হ্যাকারদের কাছে পৌঁছে যেতে পারে। তাই ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে  অনলাইন শপিং না করাই ভালো।

সিকিউরিটি সেটিংস অপশনটি অপ্টিমাইজ করে রাখবেন

সবসময় চেক করা দরকার আপনার কম্পিউটারের সিকিউরিটি সেটিংস অপ্টিমাইজ আছে কিনা। আবার বিভিন্ন ম্যালওয়্যার সিস্টেম সিকিউরিটি অকার্যকারিতার সুযোগ নিয়ে নেই। ব্রাউজার এবং অপারেটিং সিস্টেম প্রতিনিয়ত আপডেট করলে এই ধরণের নানা রকম সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন। এছাড়াও অপারেটিং সিস্টেম অথবা ব্রাউজারে থাকা নানা রকমের সমস্যা খুঁজে বের করার জন্য আপনার ডিভাইসের সিকিউরিটি প্যাকেজে থাকা সিকিউরিটি অপটিমাইজার টুল ব্যবহার করা হয়।

এসএসএল এনক্রিপশন চেক করে নিন

অনলাইনে কেনাকাটা করার সময় ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেওয়ার আগে ওই ওয়েবসাইটে এসএসএল এনক্রিপশন অপশনটি আছে কিনা তা অবশ্যই জেনে নেবেন। যেকোনো আসল এবং নিরাপদ ওয়েবসাইট তাদের ওয়েবসাইট ব্যাবহারকারীদের সুরক্ষা বজায় রাখার জন্য এসএসএল এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। (কিন্তু আজকাল ফেক ওয়েবসাইট গুলোতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা শুরু হয়ে গেছে।)

খুব সহজেই বোঝা যায় কোনো ওয়েবসাইটে এসএসএল এনক্রিপশন প্রযুক্তি আছে কিনা। যদি ওই ওয়েবসাইটে SSL ইন্সটল করা থাকে তাহলে ব্রাউজার এড্রেস বারে থাকা ওয়েবসাইটের ইউআরএল এর পাশে একটি তালার চিহ্ন দেখতে পাওয়া যাবে। এছাড়াও https এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের এড্রেস শুরু হবে। কিন্তু হ্যা কোনো ওয়েবসাইটে এসএসএল থাকলেও তা যে নিরাপদ হবেই এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

ক্রেডিট কার্ডের স্টেটমেন্ট রেগুলার চেক করা

প্রয়োজন হলে প্রত্যেকবার লেনদেন করার পর কার্ডের স্টেটমেন্ট যাচাই করে নিন। যদি কোনো রকমের ফেক পারচেজ করা হয় তাহলে তা খুব সহজেই এর মাধ্যমে উদ্ধার করা যাবে এবং খুব তারাতারি ক্রেডিট কার্ড ইস্যুকারীকে জানানো যাবে। যদি কোনো সময় ভুল ভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা হয় তাহলে শীঘ্রই ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিকে জানালে তারা এই বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করতে পারবে। কিন্তু আপনার সমস্যা জানাতে যদি দেরি করে ফেলেন তখন ক্রেডিট কার্ড কোম্পানির কিছুই করার থাকবে না এবং এর পুরোপুরি দায়ভার চলে যাবে ব্যাবহারকারীর উপর।

কঠিনতম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন

ক্রেডিট কার্ড এর সাহায্যে অনলাইনে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে আরও একটি সিকিউরিটি ডিফেন্স হলো একটি কঠিনতম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। (বিশেষ করে আপনি যদি ওয়েবসাইটে কার্ডের তথ্য সেভ করে রাখেন)। প্রত্যেকটি আলাদা শপিং একাউন্ট গুলির জন্য ভিন্ন ভিন্ন এবং কঠিনতম পাসওয়ার্ড দেওয়া দরকার।

এর ফলে একাউন্টের সব নিরাপত্তা বজায় থাকবে এবং একটি একাউন্ট হ্যাক হলে অপরটি সুরক্ষিত থাকবে। একটি কঠিনতম পাসওয়ার্ডে থাকে ছোট ও বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা এবং স্পেশাল ক্যারেক্টার। আপনার সব পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রত্যেক ৩-৪ মাস অন্তর একবার হলেও পাল্টানো দরকার।

ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইন কেনাকাটা করলে আরও কি কি সাবধানতা মেনে চলবেন তা জেনে নিন

স্টেপ ১।  যেসব ওয়েবসাইট আপনার কার্ডের পিন চায় তাদের এড়িয়ে চলুন। আসলে অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটগুলো কেবলমাত্র ফোনে আসা ট্রানজেকশন পাসওয়ার্ড (OTP) এবং সিভিভি নাম্বার চেয়ে থাকে। 

স্টেপ ২।  প্রথম থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইন্সটল করে রেখে দিন আপনার ফোনে, ল্যাপটপে বা ডেক্সটপে।

স্টেপ ৩।  সেই সেটিংসটি অন করে রাখুন আপনার ফোনে যাতে আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার হলে আপনি ইমেল অথবা ম্যাসেজের মাধ্যমে তা জানতে পারেন।

ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে আপনাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন আর যদি কোনোরকম জিজ্ঞাসা থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। 

FAQ.

প্রশ্ন : ক্রেডিট কার্ড মানে কী ?

উত্তর : ক্রেডিট কার্ড হল এক ধরনের ক্রেডিট সুবিধা, যা ব্যাঙ্কগুলি দ্বারা সরবরাহ করা হয়। যা গ্রাহকদের একটি পূর্ব-অনুমোদিত ক্রেডিট সীমার মধ্যে তহবিল ধার করতে দেয়। এটি গ্রাহকদের পণ্য এবং পরিষেবাগুলিতে ক্রয় লেনদেন করতে সক্ষম করে।

প্রশ্ন : প্রধান চারটি ক্রেডিট কার্ডের নাম কী কী ?

উত্তর : চারটি প্রধান ক্রেডিট কার্ডের নাম হল – ১। ভিসা,
২। মাস্টারকার্ড, ৩। আমেরিকান এক্সপ্রেস এবং ৪। ডিসকভার।

প্রশ্ন : কোন ব্যাঙ্ক সহজেই ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে ?

উত্তর : HDFC ব্যাঙ্ক সহজেই ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে।

প্রশ্ন : সব থেকে সেরা ক্রেডিট কার্ড কোনটি ?

উত্তর : SBI কার্ড প্রাইম হল বাজারে সবচেয়ে মূল্যবান ক্রেডিট কার্ড।

প্রশ্ন : আমি কী ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়া ক্রেডিট কার্ড পেতে পারি ?

উত্তর : এক কথাই না, কারণ ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিগুলি ক্রেডিট কার্ডের জন্য আপনার যোগ্যতা নির্ধারণ করতে শুধুমাত্র আপনার ক্রেডিট স্কোর, বর্তমান কর্মসংস্থান এবং আয় দেখবে।

আপনার জন্য আরো

1.নতুন ATM কার্ডের পিন জেনারেট করবেন কিভাবে?

2.ভুল করে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে ফেললে সেই টাকা কীভাবে ফিরে পাবেন ?

3.আপনার রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বর UAN অ্যাকাউন্টে কীভাবে পরিবর্তন করবেন ?

4.ATM বুথে ছেঁড়া নোট পেলে করণীয় ?

Leave a Comment