অপেক্ষার দিন শেষ হতে চলেছে, এবার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) থাকবে মানুষের মতোই। এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শুধুমাত্র জটিল সমস্যার সমাধান করবে না বরং মানুষের মতোই আচরণ করবে মানুষের মতোই ভাববে এবং কথাও বলবে। ইতিমধ্যেই মাইক্রোসফটের কর্তা স্যাট্যায়া নাডেল্লা এমনটাই জানিয়েছেন যে, AI হয়ে উঠবে আমাদের প্রতিদিনকার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কেমন হবে এই নতুন যুগের AI ?
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠানগুলো এমন ধরনের AI তৈরির কাজ করছে, যা ভবিষ্যতে মানুষের মতোই সহানুভূতিশীল, অনুভবনশীল এবং বাস্তব পরিস্থিতির উপযোগী। AI-কে এমন ভাবেই শেখানো হবে যে, মানুষের আবেগ, মানসিকতা এবং সামাজিক পরিস্থিতি বুঝতে পারে। আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (AGI) নামে পরিচিতি এই AI প্রযুক্তি হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। যেখানে AI নিজেই নিজেকে আরো অভিজ্ঞ করে তুলবে।
মানুষের মতো অনুভূতি এবং আচরণ করবে AI
আমরা এখনো AI-এর সেই জায়গায় পৌঁছায়নি যেখানে AI সত্যি করেই মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারবে। তবে বিভিন্ন রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্টের সাহায্যে AI-কে এমনভাবে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, সে যেন একটি মানুষের অনুভূতি বুঝতে পারে এবং সেই মতো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। AI ভবিষ্যতে এমনভাবে তৈরি হবে যা শুধুমাত্র নির্দেশ মেনে চলবে না বরং মানুষের মেজাজ, মানুষের ইশারা এবং গলার স্বরও বুঝতে পারবে।
AI এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্পর্ক
AI যখন মানুষের মতো আচরণ করতে শিখে যাবে তখন কেবলমাত্র প্রযুক্তিগত বা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও পরিবর্তন ঘটাবে। ভবিষ্যতে AI স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং আরো বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের কাজে সাহায্য করবে। বলা যেতে পারে, AI–চালিত রোবট হতে পারে একজন বৃদ্ধ মানুষের সঙ্গী, একাকিত্ব মানুষের বন্ধু বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর শিক্ষকের মতো।
তবে জানা গেছে যে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি AI মানুষের মতো আচরণ শিখে যায়, তাহলে কতটা স্বাধীন হবে এবং মানুষের ওপরে কতটা প্রভাব ফেলবে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। AI নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কঠোর বিধি নিষেধ থাকা দরকার। যা এই প্রযুক্তি যুগের জন্য সহায়ক হবে এবং বিপজ্জনক হবে না।
AI সম্পর্কিত নীতি এবং নিয়ন্ত্রণ
মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানিগুলো ইতিমধ্যে AI-এর ব্যবহারের নিয়মাবলী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে। AI-এর নৈতিকতা, গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তার বিষয়গুলিতে নজর রেখে, যেন এটি মানুষের উপকারে আসে সেই দিকেও জোর দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এই নিয়মাবলীগুলি AI ওপর নির্ভরশীলতা এবং AI-এর খারাপ দিকগুলো প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মানবিক মূল্যবোধ ও নিরাপত্তা
মাইক্রোসফটের কর্তা স্যাট্যায়া নাডেল্লা বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, AI-এর বিকাশে মানবিক মূল্যবোধ এবং নৈতিকতার বিষয়টি সবসময় মাথায় রাখতে হবে। এর ফলে, AI-এর ব্যবহারে মানুষের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তা অধিক মাত্রায় গুরুত্ব পাবে। AI-এর ব্যবহার আমাদের জীবনের উন্নতি করবে, তবে এর সঠিক ব্যবহারও নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হবে।
মূল বিষয়
- মানুষের মত চিন্তা করবে AI: মাইক্রোসফট কর্তার মতে, AI এখন আর শুধু প্রযুক্তিগত যন্ত্র নয় বা শুধু ডেটা প্রসেসর করা যন্ত্র নয়। AI এখন শিখতে, বুঝতে এবং সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়ে উঠেছে। AI ভবিষ্যতের সব ধরনের কাজ করতে পারবে, যা আজকের দিনে শুধুমাত্র মানুষেরাই করতে পারে।
- AI এর ক্ষমতা: AI-এর ক্ষমতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। AI এখন ছবি আঁকতে, কবিতা রচনা করতে এবং সঙ্গীত রচনা করতেও সক্ষম। ভবিষ্যতে AI হয়তো নতুন নতুন ধারণা তৈরি করবে এবং মানব সভ্যতাকে নতুন উচ্চতা নিয়ে যাবে।
- AI এর প্রভাব: AI-এর উত্থান আমাদের জীবনের নানা দিকে গভীর প্রভাব ফেলবে। শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা এবং আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও AI-এর প্রভাব দেখা যাবে।
- চ্যালেঞ্জ এবং উদ্বেগ: AI-এর সর্বাধিক মাত্রায় পৌঁছানোর জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ এবং উদ্বেগ রয়েছে। AI-এর অপব্যবহার, গোপনীয়তা এবং কাজের জায়গার উপর AI-এর প্রভাব এই চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে অন্যতম।
উপসংহার
মাইক্রোসফটের কর্তা যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে আমাদের একটি নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। যেখানে এআই মানুষের সঙ্গী হয়ে তাদের জীবনকে সহজ ও আনন্দময় করে তুলবে। AI-এর এই অগ্রগতি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক পরিবর্তন আনবে এবং আমাদের মান উন্নত করবে।
আমরা সবাই অপেক্ষা করছি নতুন ভবিষ্যতের জন্য। যেখানে এআই এবং মানুষের মধ্যে সহযোগিতা আমাদের জীবনে এক নতুন যুগের সূচনা করবে। চলুন, আমরা সকলে এই যাত্রায় অংশগ্রহণ করি।
আপনাদের জন্য আরো
2.Bitcoin–এর দামের রেকর্ড বৃদ্ধি, $৭৫,০০০ অতিক্রম: ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে নতুন আশা !
3.Google Chrome ব্যবহারকারীদের জন্য সতর্কতা: হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা !
4.‘মন্নত’–এর আলোকমালায় শাহরুখ খানের ৫৯তম জন্মদিন ও দিওয়ালি উদযাপন