মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম সম্পর্কে আমাদের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে যেগুলো নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারে আলোচনা করব।
উইন্ডোস কম্পিউটারে বেশি ভাইরাস থাকে
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম কোনরকম ভাইরাস নিয়ে আসেনা। আপনি যখন কোন সফটওয়্যার এই অপারেটিং সিস্টেমে ইনস্টল করেন তখন সেই সফট্ওয়ারে যদি কোন ম্যালওয়্যার থাকে তাহলে অপারেটিং সিস্টেম টি ভাইরাস আক্রান্ত হয়। এছাড়া যদি আপনি কোনো অজানা অসুরক্ষিত ওয়েবসাইট থেকে কোন সফটওয়্যার অথবা কোন কনটেন্ট ডাউনলোড করেন সেক্ষেত্রেও আপনার কম্পিউটারটি ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে।
ভাইরাস প্রতিহত করার কিছু উপায়
a. অজানা কোন ওয়েবসাইট বা সোর্স থেকে কোনরকম ফাইল ডাউনলোড করবেন না।
b. অজানা কোন ইমেইল আসলে তাতে যে অ্যাটাচমেন্ট থাকে সেগুলো ওপেন করবেন না।
c. একটি এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করুন।
d. আপনার বন্ধু-বান্ধব বা অপরিচিত কোন ব্যক্তির ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহার করার আগে সেটিকে স্ক্যান করে নিন।
e. Crack সফটওয়্যার ব্যবহার না করাই ভালো।
উইন্ডোজ BSOD(blue screen of death)/সব সময় ক্রাশ করে
অনেকের অভিযোগ থাকে উইন্ডোজ কম্পিউটার নাকি মাঝেমধ্যেই crash করে। তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার কম্পিউটার কখনোই এমনি এমনি কাজ করে না তার পেছনে নিশ্চয়ই আপনার কোন পাকামি থাকে। আপনি যে সমস্ত সফটওয়্যার ব্যবহার করেন অথবা আপনার হার্ডওয়ারের কোনরকম সমস্যা হলে তারপরই উইন্ডোস ক্রাশ করে এবং অনেক সময় আপনারা “ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ” দেখতে পান।
C ড্রাইভ ফরম্যাট না করে উইন্ডোজ ইন্সটল করা যায় না
এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। আপনি আপনার C ড্রাইভ ফরমেট করবেন কি করবেন না সেটা আপনার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ব্যাপার। সি ড্রাইভ ফরম্যাট না করেও আপনি উইন্ডোজ ইন্সটল করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার আগের ফাইলগুলো windows.old নামের একটি ফোল্ডারে জমা হবে।
তবে সি ড্রাইভ ফরম্যাট করে তারপর নতুন অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করা ভালো কারণ সি ড্রাইভ ফরম্যাট করলে পূর্ববর্তী যে জাঙ্ক ফাইল ও ভাইরাস গুলি থাকে সেগুলো ডিলিট হয়ে যায়। যে আপনার কম্পিউটার এর পক্ষে ভালো। ছাড়া পূর্ববর্তী জাঙ্ক ফাইল গুলো আপনার কোন কাজে আসেনা এবং আপনার কম্পিউটারের কিছুটা স্পেসও ফাঁকা হয়।
Crack ফাইল কোন প্রকার ক্ষতি করেনা
প্রাক ফাইল বা সফটওয়্যার আমাদের কম্পিউটারে বিভিন্ন রকম ক্ষতি করে কিন্তু অনেকেরই crack ছাড়া চলেনা। আবার অনেকেই টাকা দিয়ে সফটওয়্যার কেনার মত সামর্থ্য থাকে না সেই জন্য আমরা ক্রাক সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। আর এই ক্রাক ফাইল এর মাধ্যমে সবথেকে বেশি ভাইরাস আমাদের কম্পিউটারে আসে। তারমধ্যে যে অ্যাপ্লিকেশনগুলি আমরা ইন্সটল করি সেগুলি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
আপনার কাছে যদি কোন সফটওয়্যার কেনার পয়সা না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি সেই সফটওয়্যার এর বিকল্প হিসাবে অন্য কোন ফ্রী সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন।
C ড্রাইভে কোন কিছু রাখতে নেই
সি ড্রাইভে কোন কিছু রাখতে নেই এটা বলা হয় কারণ যখন আপনার কম্পিউটারে কোন রকম সমস্যা হয় তখন সি ড্রাইভ কে ফরম্যাট করতে হয় এবং নতুন অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করতে হয়। সেই জন্যই সি ড্রাইভে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো রাখতে বারণ করা হয়। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই। সি ড্রাইভে আপনি আপনার ডকুমেন্ট এবং ফাইলগুলো রাখতে পারেন যেগুলো ডিলিট হয়ে গেলে আপনার কোন সমস্যা হবে না।
উইন্ডোজ ডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাসটি কোন কাজের নয়
এই অ্যান্টিভাইরাসটি কোন কাজের নয় অনেকেই মনে করে কিন্তু এটা ঠিক নয়। এটা হচ্ছে উইন্ডোজের সবচেয়ে সুরক্ষিত এবং কাজের একটি অ্যান্টিভাইরাস। এটি অনেক ক্রাক ফাইলকে নিয়ে ঝামেলা করে আপনার ইনস্টল করা অনেক সফটওয়্যার কেই সাসপিসিয়াস বলে চিহ্নিত করে ঠিকই কিন্তু এটাই আপনার কম্পিউটার কে সবথেকে বেশি প্রটেক্ট করে। এই অ্যান্টিভাইরাস এর কারনে আপনার কোন রকম হ্যাকের সমস্যা হয় না। কিন্তু আপনি যদি থার্ড পার্টি কোন এন্টিভাইরাস ব্যবহার করেন সে ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু নিরাপদ সেই বিষয়ে একটু সন্দেহ থেকেই যায়। কারণ অনেক এন্টিভাইরাসই আপনার ডেটা চুরি করে থাকে। এই ধরনের ঘটনা ঘটতেও কিন্তু দেখা গেছে।
উইন্ডোজ কম্পিউটার বেশি দিন চলে না
ভাবতে পাচ্ছেন মানুষেরা এরকমভাবে। কম্পিউটারে নাকি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করলে সেই কম্পিউটার বেশিদিন টেকে না। আপনিও যদি এমনটা ভেবে থাকেন তাহলে একেবারেই ভুল ভাবছেন।
উইন্ডোজ কম্পিউটার বছরের দু তিনবার ফরম্যাট করতে হয়
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম যারা ব্যবহার করেন অনেকেরই ভুল ধারণা রয়েছে যে এই অপারেটিং সিস্টেমটি বছরে দুই থেকে তিনবার ফরম্যাট করতে হবে। এই প্রসঙ্গে বলে রাখি এমন কোন কথা নেই আপনি আপনার কম্পিউটার টা তখনই ফরমেট করবেন যখন আপনার কম্পিউটারে কোন রকম সমস্যা দেখা দেবে অথবা আপনি আপনার কম্পিউটারে হার্ডডিস্ক টাকে একেবারে ক্লিন করে নতুন করে কাজ শুরু করতে চান।
এছাড়া অকারনে কম্পিউটার ফরমেট করার কোন দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না।
উইন্ডোজ আপডেট ডিসেবল করলে ঝামেলা মুক্ত হওয়া যায়
অনেকেই উইন্ডোজের আপডেট অপশন টি বন্ধ করে রাখে কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। কারণ উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করলে আপনার কম্পিউটার হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। আপনার কম্পিউটারে কোন ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার থাকলে সেগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ফিচার অাপডেট এই অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে থাকে যা আপনাদের কাজের অনেক সুবিধা করে। তাই বলা যায় আপডেট বন্ধ করে আপনি ঝামেলা মুক্ত হচ্ছেন না বরং ঝামেলায় পড়তে পারেন।
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সফটওয়্যার গুলি কিনতে অনেক খরচা হয়
অনেকে এমনটা বলে থাকেন যে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের যে অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলো কিন্তু অনেক খরচা হয়। তাছাড়া এমন অনেক এপ্লিকেশন আছে যেগুলিতে মাসে মাসে রেকারিং হিসাবে টাকা দিতে হয়। এই কথাটা কিছুটা সত্য হলেও সম্পূর্ণটা নয়। কারণ দেখুন এমন অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলো আপনার ফ্রী তেই ব্যবহার করতে পারবেন। তবে আপনি যদি কোন প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছু টাকা খরচা করতেই হবে।
উপসংহার
তো বন্ধুরা আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন উইন্ডোজ কম্পিউটার সম্পর্কে কতগুলি ভুল ধারণা আমাদের মধ্যে ছিল যেগুলি সম্পূর্ণটা সত্য নয়।
এছাড়াও কোন বিষয়ে আপনাদের যদি সন্দেহ থাকে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।
FAQ.
প্রশ্ন:BSOD এর পুরো কথা কি?
উত্তর: Blue Screen of death
প্রশ্ন:উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম কে আবিষ্কার করেছিলেন?
উত্তর: Bill Gates
প্রশ্ন:নতুন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করার জন্য সি ড্রাইভ ফরম্যাট করা কি আবশ্যক?
উত্তর: C ড্রাইভ ফরম্যাট না করেও নতুন অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করা যায়।
প্রশ্ন:উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেমটি কবে রিলিজ হয়েছিল?
উত্তর:5 October 2021
প্রশ্ন:এন্টিভাইরাস কি?
উত্তর:ভাইরাস প্রতিরোধ করার এক প্রকার প্রোগ্রাম বিশেষ যা আপনার কম্পিউটারকে ক্ষতিকারক ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করে।
আপনার জন্য আরো
1.উইন্ডোস কম্পিউটারের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সেটিংগুলো চালু করুন
2.আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত কিনা কিভাবে জানবেন ?
3.কম্পিউটারের গতি বাড়ানোর 10 টি সুপার হট টিপস
4.সফটওয়্যার পাইরেসি কি? সফটওয়্যার পাইরেসি প্রতিরোধের উপায়